অক্টোবর ১৫, ২০২৫ ১:৫১ পিএম

যমুনার গ্রাসে ধুনটে তীব্র ভাঙন: বিলীন দোকান-বাড়ি, হুমকিতে শত পরিবার

Oplus_16908288
Oplus_16908288

যমুনা নদীর হঠাৎ রুদ্ররূপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার সহরাবাড়ি এলাকা। বুধবার দুপুর থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে দোকানপাট, বাড়িঘর ও ফসলি জমি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত কয়েক দিনে উজান থেকে হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করলে নদী তীরের মাটি দুর্বল হয়ে পড়ে। বুধবার দুপুর থেকে শুরু হয় প্রবল ভাঙন। এখন পর্যন্ত ৪টি দোকান, প্রায় ৬০ বিঘা ফসলি জমি এবং অন্তত ১০টি পরিবার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ছকিনা বেগম বলেন, “আমরা অস্থায়ী ব্যবস্থা চাই না। বালুর বস্তা দিয়ে এই ভাঙন ঠেকানো যাবে না।”

অন্যদিকে, গোসাইবাড়ি গ্রামের নজরুল ইসলামের আশঙ্কা, “স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ না হলে সহরাবাড়ির ৫০০ পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে, ভাঙন আগে থেকেই ছিল, কিন্তু ব্যবস্থা নেয়নি কেউ”।

স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “অনেক আগে থেকেই ভাঙন হচ্ছিল, কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন ভাঙন তীব্র হয়ে উঠলে এসে বালুর ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এটা কি সমস্যার সমাধান?”

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, “ভাঙন ঠেকাতে আমরা সাড়ে সাত হাজার জিও ব্যাগ ও দেড় হাজার জিও-২ ব্যাগ ফেলছি। আশা করছি, এতে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

তিনি আরও জানান, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলায় যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রকল্প (ডিপিপি) জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে সেখানে স্থায়ী সিসি ব্লকের বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হবে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সরকারিভাবে অনুমোদিত বালু মহল থেকে এবং বেসরকারি উদ্যোগে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের কারণেই নদীর এই ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার লিটন আলী বলেন, “এখানে একটি সরকারি লিজপ্রাপ্ত বালু মহল রয়েছে। তবে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের।”

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print