ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ ১০:৫৩ পিএম

চাকরির পরীক্ষায় ৩৬ বার ফেল, অবশেষে বিসিএস ক্যাডার

বিভিন্ন চাকরির প্রিলি পরীক্ষা দিয়েই যাচ্ছিলেন কিন্তু কোনোটি পাস করতে পারছিলেন না পিংকি রানী মজুমদার। একের পর এক ৩৬টি প্রিলি দিয়েও পাস করতে পারেননি তিনি। কিন্তু হার মেনে নেননি। চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে অবশ্যই পারবেন, অবশ্যই সফল হবেন। অবশেষে ৩৭তম চাকরির পরীক্ষায় প্রথমবারের মত প্রিলি পাস করেন কুমিল্লার মেয়ে পিংকি রানী।

পিংকি রানী মজুমদার ৪১তম বিসিএসে (বন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার বাবা দুলাল চন্দ্র মজুমদার, যিনি দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন। মা মমতা রানী মজুমদার একজন গৃহিণী।

তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে অবশ্যই পারবেন, অবশ্যই সফল হবেন। অবশেষে ৩৭ নম্বর চাকরির পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো প্রিলি পাশ করেন। এরপর থেকে মোটামুটি সব প্রিলি পরীক্ষায় পাশ করতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পাশ করেন। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডার তালিকায় জায়গা পান। কিন্তু দু:খ তখনো রয়ে গিয়েছিল কারণ ক্যাডার হতে পারেননি।

চেষ্টা অব্যাহত থাকে, ৪১তম বিসিএস শেষ বিসিএস। অবশেষে ৪১তম বিসিএসে বন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হোন। হ্যাঁ, ৪১তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত পিংকি রানী মজুমদারের গল্প বলছি।

তিনি ২০১৬ সালে জুলাই মাসে মাস্টার্স শেষ করেন। যেহেতু ডিপার্টমেন্টে পজিশন ছিলেন তাই ভেবেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন। সেজন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে ভাইভা দিয়েছিলেন কিন্তু চাকরি হয়নি। বুঝতে পেরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য আরও কিছু যোগ্যতা লাগে।

তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার চিন্তা বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন বিসিএস ক্যাডার হবেন। ৩৮তম বিসিএসে লক্ষ্য স্থির করে পড়াশোনা শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির প্রত্যাশা থাকার কারণে চাকরির প্রস্তুতি কিছুই ছিল না। কিভাবে শুরু করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। কাছের এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন।

পিংকি রানী মজুমদার বলেন, সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমি ৪১তম বিসিএসে বন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি তার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তবে আমার এ সাফল্যে আমার বাবা-মা অনেক খুশি হয়েছেন এতেই আমি অনেক আনন্দিত। বাবা-মায়ের সুখই আমার সুখ। তাদের মুখে হাসি ফুটাতে পারাই আমার সফলতা। প্রথমে বলতে চাই বিসিএস একটি ধৈর্যের পরীক্ষা। প্রতি বিসিএসে ক্যাডার হয় প্রায় দুই হাজারের মতো, বাকিরা ক্যাডার হয় না। তাই শুধু বিসিএসকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বিকল্প পথ রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমি চাকরির প্রস্তুতির পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে কুমিল্লা ল’ কলেজ থেকে এলএলবি সম্পন্ন করি। যাতে করে চাকরি না হলেও আমি অ্যাডভোকেটশিপ নিতে পারি। সেই সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হবে। নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। দুই দিন পড়ে দুই দিন পড়বে না- এমনটা করা যাবে না। পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, আমি মনে করি দিন শেষে বিসিএস একটি চাকরি মাত্র, জীবনের ছোট্ট একটি অংশ, এটা সম্পূর্ণ জীবন না। তাই যতটা বিনয়ী, কৃতজ্ঞতাবোধ এবং ভণিতামুক্ত থাকব ততই শান্তি পাব বলে বিশ্বাস করি। বিডি জার্নাল

এনসিএন/এসকে

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সম্পর্কিত