অক্টোবর ১৭, ২০২৪ ৮:৫৭ পিএম

প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে : মেজবাউল করিম

প্রতিবন্ধী নারী ও মেয়েদের অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতে বগুড়ায় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উইমেন উইথ ডিজএ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডাব্লিউডিডিএফ) আয়োজনে ও ফাউন্ডেশন ফর জাস্ট সোসাইটি’র সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার বগুড়া পর্যটন মোটেলের কনফারেন্স হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ডাব্লিউডিডিএফ’র নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টির সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেজবাউল করিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো: আতাউর রহমান। বিদেশী অতিথি ছিলেন জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো মামি কানাজাওয়া।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: মেজবাউল করিম বলেন, প্রতিবন্ধী নারীদের মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান ও অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে ডাব্লিউডিডিএফ। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সেই সমস্যর সমাধান ও তাদেরকে স্বাবলম্বী করতে যেসকল উপকরণ দেয়া হয় তা সঠিক ভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা পরবর্তীতে তাদের খোঁজ খবর নেয়া খুবই জরুরী। এতে তাদেরকে দেয়া উপকরণের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কি না তার চিত্র পাওয়া যায়। ফলে উপকারভোগিরাও এসব বিষয়ে সচেতন হতে পারে এবং স্বাবলম্বী হওয়ার যাত্রায় তারা এগিয়ে আসে। আমরা চাই সমাজের কেউ যাতে পিছিয়ে না পড়ে। এই জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে তাহলেই এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সম্ভব। তিনি উল্লেখ করেন ডাব্লিউডিডিএফ খুবই প্রশংসনীয় কাজ করছে তার মধ্যে অন্যতম মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচি এবং দক্ষতা উন্নয়ন এর পরে তাদের সাবলম্বী করে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এর মধ্যে রাখা। আজকে এখানে যারা বক্তব্য রাখলেন, অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন তারা প্রকৃত অর্থেই দক্ষতা অর্জন করেছেন। সংগঠন যে ভালো কাজ করছে এটা তার প্রমাণ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আতাউর রহমান বলেন, কাউকে পিছিয়ে ফেলে নয় সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসতে হবে। এক সময় সুবর্ণ নাগরিক জরিপ করতে গিয়ে সমাজসেবার কর্মীরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়তো। কারণ সে সময় একটি পরিবারে কোন প্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে ঐ পরিবার সমাজে যাতে ছোট না হয় এ কারণে তারা প্রকাশ করার সাহস পেতো না। ২০১২ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কে সুবর্ণ নাগরিকের সন্মানে ভূষিত করা হয়। তারপর থেকেই সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এই জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণসহ তাদের এগিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি ডাব্লিউডিডিএফ যে ইতিবাচক ধারায় কাজ করে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কাজ করতে জাপান থেকে আসা মামি কানাজাওয়া বলেন, ডাব্লিউডিডিএফ এর মাঠ পর্যায়ের কাজ দেখেছি। প্রতিবন্ধী মেয়েরা স্বতস্ফুর্ত হয়ে কাজ করছে, ব্যবসা করছে আর আজ এখানে আরও মেয়েদের অভিজ্ঞতা শুনলাম। ভালো লাগছে ডাব্লিউডিডিএফ প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিবন্ধী মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে যা আগামীতে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জানান দিচ্ছে ।

ডাব্লিউডিডিএফ বগুড়া শাখা অফিসের প্রকল্প সমন্বয়কারি আব্দুল্লাহ আল ফয়সালের সঞ্চালনায় ও বগুড়া শাখা কার্যালয়ের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও উপজেলা সমন্বয়কারি গোলাম কিবরিয়ার সার্বিক তত্বাবধানে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সঞ্জু রায়, কমিউনিটি মবিলাইজার সালমা খাতুন, তানজিলা আক্তার বিপা, উপকারভোগিদের মাঝে মিরা খাতুন, রোজিনা বেগম, মেহেরুন নেছা প্রমুখ।

আলোচনা সভা পরবর্তী প্রতিবন্ধী নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ২ জনকে সেলাই মেশিন ও ৫ জন নারীকে দোকানঘরের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন প্রধান অতিথি এডিসি মেজবাউল করিম এবং ডাব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print