বগুড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও রোড মার্চে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি “রেজিস্ট্যান্স উইক বা প্রতিরোধ সপ্তাহ” পালনে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বগুড়ায় জিলা স্কুলের সামনে থেকে রোড মার্চ বের করা হয়।
মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলি প্রদক্ষিণ শেষে সাতমাথা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুক্ত মঞ্চে এসে সমাবেশ হয়।
সমাবেশটি পরিচালনা করেন ছাত্রনেতা এডভোকেট এজাজ আল ওয়াসি। সমাবেশে ছাত্ররা দাবি করেন, ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিচার ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য রাখায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেনের দেয়া বক্তব্যের ব্যাখা বা তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র নেতা ইজাজ আল ওয়াসি বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে শত শত ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে এই হত্যাকারীকে দেশে ফিরিয়ে এনে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় দেশের ছাত্র-সমাজ আরও কঠোর হতে বাধ্য হবে।
আরেক শিক্ষার্থী মারজিউল হক বলেন, জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই স্বৈরাচারকে পুর্নবাসনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অবিলম্বে এসব বক্তব্য ও চিন্তাধারা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় দেশের ছাত্র-জনতা আবারও আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
আরাফাত নামের এক শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ভাবে ঘোষিত দাবি গুলো উল্লেখ করে বলেন, দ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে নিয়ে এসে বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার ব্যবস্থা করে তার ফাসির দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে আমাদের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই। তারাও আমাদের ভাই-বোন। তাদের পরিচয় তারা বাংলাদেশী।
কর্মসূচিতে উল্লেখিত দাবি সমূহ হলো, ১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। ২. সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। ৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নূতন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।