অক্টোবর ১৭, ২০২৫ ৩:০৫ এএম

চাষে লাভবান হওয়ায় বগুড়ায় কৃষকেরা ঝুঁকছেন কলা চাষে

কলা বিক্রির পর ট্রাকে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ছবিঃ আখতার জামান
কলা বিক্রির পর ট্রাকে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ছবিঃ আখতার জামান

কলা রুয়ে না কাটো পাত, তাতেই কাপাড় তাতেই ভাত। কলার গাছ রোপনের পর পাতা না কাটলে ভলো ফলন পাওয়া যাবে। তাতে ভাত-কাপড়ের অভাব হবে না।

শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা গ্রামের আবুল মুনছুর জানান, তিনি খনার এই বচন মাথায় রেখে কলার পাতা না কেটে ফলন পেয়েছেন ভালো। কলার উৎপাদন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি তার মত অনেক কৃষক। তাদের অনেকে কলা চাষ করে পাকা বাড়ি করেছেন, অনেকে ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে বিভোর। কলায় লাভ বেশি হওয়ায় শিবগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চাষীরা কলা চাষে ঝুঁকছেন।

আরো পড়ুনঃ শেখ হাসিনার সরকার কৃষিবান্ধব সরকার : বাহাউদ্দিন নাছিম

কাঁক ডাকা ভোরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারায় রংপুর- বগুড়া মহাসড়কের কলার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেনা-বেচায় মুখরিত হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকও বেড়ে যায়। সকাল থেকে কলার হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা আসেন হাটে । আবার অনেকে কলাচাষীদের বাড়িতে রাতে অবস্থান নেয়। যাতে কাঁক ডাকা ভোরে কিনে নিয়ে গন্তব্যে পৈাঁছতে পারে।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

কেন যায়গাটি নাম চন্ডিহারা হলো কেও বলতে পারেনা। তবে নাম যাই হোক শিবগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খুব কম খরচে কলার আবাদ হয়ে থাকে। আর সেই কলার হাট বসে চন্ডিহারার রাস্তার পাশে দেড় থেকে ২ কিলোমিটার জুড়ে। ভোরে কলা চাষীরা রিক্সা ভ্যান বোঝাই করে কলা নিয়ে আসে চন্ডিহারা হাটে। প্রতি বুধবার ও শনিবার এই চন্ডিহারায় বসে কলার হাট। কলা চাষী আকরাম জানান, হাটের দিন এখানে কুষ্টিয়া, যশোর, জয়পুরহাট, ঢাকা, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার ব্যাপরীরা আসেন। প্রতি হাটের দিন প্রায় ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয় হাটে। সাগার কলা, রঙিন সাগর, সপরী বা স্থানীয় ভাষায় অনুপম, এঁটে , চাঁপা কলার প্রচুর সমাহার হাটে। জেলার কাহালু উপজেলার কলার ব্যাপারী আনছার হোসেন জানান, তিনি প্রায় ৩০ বছর এই হাট থেকে কলা কিনে নিয়ে বিক্রি তার এলাকায় পাইকারীতে বিক্রি করে থাকেন। তাতে বেশ ভাল দাম পান। জেলার অনেক জায়গায় কেজিতে আবার হালিতে কলা খুচরা বিক্রি হয়।

আরো পড়ুনঃ বগুড়ায় চিনির বাজারে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

চাঁপা কলা এক কাঁদি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। এক কাঁদিতে প্রায় দেড়শত থেকে ২০০ কলা থাকে। খুচরা বাজারে এই কলা ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি (৪ টা) আবার ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। সাগার ও রঙিন সাগার কলা দামও প্রায় একই রকম। তবে কৃষক সপরী কলার দামভালো পান। এক কাঁদি সপরী কলা পাইকারি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, জেলায় এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। এই লক্ষ্য মাত্রা সম্পূর্ণ পূরণ হয়েছে। এই উৎপাদন প্রক্রিয়া সারা বছর চলমান থাকে।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আল মুজাহিদ জানান, এই হাট থেকে ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয়। প্রতি ট্রাকে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কলা হাটের দিন বিক্রি হয়। ট্রাক প্রতি ১০ থেকে ১২ টন কলা বহন করতে পারে। এতে প্রতিহাট বারে ১৫০ টন থেকে পৈানে ২০০ টন বিক্রি হয় এই হাট থেকে। তবে ভালা দাম পেয়ে চাষী ও ব্যাপরীরা খুশি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print