ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

স্ত্রীর প্রতিশোধ নিতে সৎ বাবার হাতে খুন হয় সাব্বির

শাজাহানপুরে শিশু সিয়াম হত্যার দুই আসামী গ্রেপ্তার (বামে), লাউ জমিতে নিহতের মরদেহ (ডানে)। ছবি: এনসিএন
শাজাহানপুরে শিশু সিয়াম হত্যার দুই আসামী গ্রেপ্তার (বামে), লাউ জমিতে নিহতের মরদেহ (ডানে)। ছবি: এনসিএন

বগুড়ার শাজাহানপুরে স্ত্রীর প্রতিশোধ নিতে সৎ বাবার হাতে এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার মানিকদিপা বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ছাত্রের নাম সামিউল ইসলাম সাব্বির (১০)। সে সাজাপুর পূর্ব দক্ষিণপাড়া তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।

বুধবার (১৮ মে) সকাল ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

আড়ও পড়ুন: ‘সৎ বাবার’ সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সেই শিশু

জানা যায়, প্রায় দশ বছর আগে মাঝিড়া কাগজীপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের সাথে বিয়ে হয় সালেহা বেগমের। তাদের সেই সংসারে ছেলে সন্তান সামিউল ইসলাম সাব্বির জন্মগ্রহন করে। তবে স্বামী জাহাঙ্গীর মাদকসেবী হওয়ায় সালেহা তাকে তালাক দেয়। এ ঘটনার দেড় মাস পর ছেলে সাব্বিরকে সাথে রেখেই শাজাহানপুরের খরনা কমলাচাপড় এলাকার ফজলুল হককে বিয়ে করেন সালেহা। তবে বিয়ের পর সৎ ছেলেকে মেনে নিতে পারছিলেন না সালেহার দ্বিতীয় স্বামী ফজলুল।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সালেহার প্রথম ঘরের সন্তানকে নানা সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফজলুল হক। এমনকি রাতের বেলায় সাব্বিরকে অন্যত্রে রেখে দেয়াসহ অনাহারে রাখতেন আসামী ফজলুল। সন্তানের কষ্ট দেখে বিয়ের কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর কাজী অফিসের মাধ্যমে তাকে তালাক প্রদান করেন সালেহা। পরে সাব্বিরকে মাদ্রাসায় রেখে আসেন তিনি।

আড়ও পড়ুন: শাজাহানপুরে লাউ জমিতে অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ

মূলত সন্তানের জন্য স্বামীকে তালাক দেয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষিপ্ত হন আসামী ফজলুল। এতে সালেহার উপর প্রতিশোধ নিতে তার ছেলেকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী আরেক আসামী অনিতা রানীকে মা পরিচয় দিয়ে সাব্বিরকে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর ওই শিশুর গলায় সুতার রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ গোপন করার জন্য লাউ ক্ষেতের খুটির সাথে বেঁধে রেখে চলে যায়।

বিষয়টি সম্পর্কে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার জানিয়েছেন, ‘এমন নির্মমভাবে শিশুকে হত্যার ঘটনায় আমরা আশ্চর্য হয়ে গিয়েছে। মাদ্রাসা ছাত্র সাব্বিরের খুনী ছিলেন তারই সৎ বাবা ফজলুল হক। মূলত তার মায়ের উপর প্রতিশোধ নিতেই এমন জঘন্য পন্থা অবলম্বন করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় প্রধান আসামী ফজলুল হক ও তার সহযোগী অনিতা রানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের থেকে আরও তথ্য নিতে আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। পাশাপাশি প্রচলিত আইনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এনসিএন/এআইএ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print