অক্টোবর ১৯, ২০২৫ ৪:৫৪ এএম

অসময়ের পাকা আম ইফতার চাহিদা মেটাবে

মৌশুম শুরু না হতেই গাছে আম। লাভের মুখ দেখছেন কৃষক। ছবিঃ এনসিএন
মৌশুম শুরু না হতেই গাছে আম। লাভের মুখ দেখছেন কৃষক। ছবিঃ এনসিএন

চলছে বৈশাখ মাস। সবুজ পাতার মুকুলের ফাঁকে থোকায় থোকায় দুলছে গাছপাকা-কাঁচা আম। সাধারণত জৈষ্ঠ্য মাসে আম পরিপক্বতা পায়। অথচ এ বাগানে, সারা বছর জুড়ে বারো মাসি জাতের আমের এমন দৃশ্য দেখা যায়। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মাগুরাচাইড় এলাকায় মামনুর রশীদ ও শহিদুল ইসলাম এর যৌথ ফুল এগ্রো ফার্ম।

শেরপুর উপজেলা মাগুরাচাইড় এলাকার বিলেত ফেরত শহিদুল ইসলাম ও খানপুর ভাটরা গ্রামের স্নাতকোত্তর শেষ করা বেকার যুবক মামুনুর রশীদ। স্বপ্নবাজ এই দুই উদ্যমী যুবকের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তুলেন ফুল এগ্রো ফার্মটি।

দেশের মানুষদের নিরাপদ ফল পুষ্টি যোগান দিতে ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলক ভাবে ২০০ টি বারোমাসি আম গাছে সঙ্গে কুল ও পেয়ারা মিশ্র ফলচাষ শুরু করেন।সফলতা পেয়ে বর্তমানে ৪৫ বিঘা জমি বর্গ নিয়ে বরোমাসি আমের বাগান গড়ে তুলেছেন তারা।

সরেজমিন ফুল এগ্রো ফার্ম বারোমাসি আমবাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪৫ বিঘার আমের বাগান। তাঁর বাগানের গাছগুলো পাকা কাঁচা আমে ভরা। এই আমের নাম ‘কাটিমন’। এটি থাইল্যান্ডের আমের একটি জাত। কাটিমনের পাশাপাশি তাদের বাগানে ‘বারি-১১’ জাতের আমও আছে। এখনও বাগানের গাছে অন্তত ৫০-৬০হাজার আম আছে। পবিত্র রমজান মাস, ঈদে সেগুলো বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রমজান মাসে ইফতারে তালিকায় অসময়ে পাকা আম রাখতে অনলাইনে অর্ডারে পাশাপাশি বাগানে প্রায়দিনই স্থানীয় দর্শনার্থীর ভিড় জমে।

শামিন হোসেন নামের ব্যাবসায়ী বলেন, লোকমুখে মাধ্যমে জানতে পারি ফুল এগ্রো বাগানে সারা বছর সুস্বাদু আম পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইফতারে খাওয়ার জন্য দুই কেজি পাকা আম কিনতে এসেছি।

ফুল এগ্রো বাগানে কাজ করছিলেন কর্মচারী আব্দুল সাত্তার। তিনি জানান, “এ বাগানে সারা বছরই সুস্বাদু আম পাওয়া যায়। সেগুলা কার্টনে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরা অর্ডারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”

বাগান মালিক শহিদুল ইসলাম, মামুনুর বলেন, “এবার শীত মৌসুমে আমের দাম ভালো হওয়ায় ৪০০-৫০০ টাকা কেজি দরে অসময়ের আম বিক্রি করেছি। এখন তা বিক্রি করছি ২০০-২৫০ টাকা করে। এ পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। আশা করছি রমজানে শেষে আরও ১৮-২০ লাখ টাকার আম বিক্রি হবে।

কথা হয় অপর উদ্যোক্তা মামুনুর রশীদের সঙ্গে তিনি জানান, অনেক লোকজন আসছেন তাদের থেকে পরামর্শ ও আমের চারা সংগ্রহ করতে। তিনি চান দেশজুড়ে এ আম ছড়িয়ে পড়ুক। অসময়ে আম ফলিয়ে চাষিরা লাভবান হোক। আমরা সঠিক পরামর্শ ও ভালো মানের আমের চারা বিক্রি করা শুরু করছি। তিনি আরো বলেন, দেশের বেকার তরুণ-যুবকরা বিভিন্ন প্রকারের ফলের চাষ করে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে নিজেরাই স্বাবলম্বী হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হর্টিকালচার সেন্টার বনানী উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, গত কয়েক বছর থেকে সিজনাল আমে দাম কম হওয়ায় কিছু আগ্রহী কৃষকরা বারোমাসি আমচাষে ঝুঁকছেন। হর্টিকালচার সেন্টার প্রদর্শনীয় প্লটের মাধ্যমে বারোমাসি আম চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে। এ জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে বারোমাসি আমবাগান রয়েছে।

শেরপুর মামুনুর ও শহিদুল বারোমাসি আমচাষে হর্টিকালচার সেন্টার পরামর্শে সফলতা পেয়েছে। রমজান মাসে তাদের বাগান সুমিষ্ট কাটিমন আম পাওয়া যাচ্ছে।বগুড়াসহ দেশবাসীর জন্য এটি সুখবর অসময়ের পাকা আম ইফতার চাহিদা মেটাবে ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print