অক্টোবর ১৯, ২০২৫ ২:২১ এএম

আড়তের ৩৩ টাকার পেঁয়াজ বাজারে ৪৫ টাকা

পেঁয়াজ। ছবি: এনসিএন
পেঁয়াজ। ছবি: এনসিএন

বগুড়া: দেশে সয়াবিন তেলের পর ছুটতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। গেল কয়েকদিন ধরেই সয়াবিন তেল নিয়ে ভোগান্তি রয়েছে সাধারণ ক্রেতারা। এরই মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা।

মূলত প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। আর এ কারণে দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে অজুহাত দাঁড় করিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রোববার (১৫ মে) দুপুরে সরেজমিন শহরের ফতেহ আলী ও রাজা বাজারে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল কয়েকদিনের ব্যবধানে খুচরায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এখন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। যা ক’দিন আগেও ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভোক্তরা। শহরের চকসুত্রাপুর থেকে রাজা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন হারুন হাসান। তিনি বললেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছেই। বাজারে কোন নিয়ন্ত্রন নেই। প্রথমে তেল এবার পেঁয়াজ, এরপর কি হবে তা জানেন না এই পল্লী চিকিৎসক।

লতাশ্রী মজুমদার নামে আরেক সরকারি কর্মকর্তা পেঁয়াজ কিনতে এসে জানালেন, ঈদের আগেও ভালোমানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনেছি ৩০ টাকায়। যা বেড়ে আজ দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকায়। এভাবে প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়ে গেলে আমরা কোথায় যাব। এখন তো ভাবছি, পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি রান্না করতে হবে।

৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ফতেহ আলী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. খোকন। তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে আমরা বেশি দামে পেয়াজ কিনছি। ৪০ কেজির বস্তা ১৬৮০ টাকা দিয়ে কিনেছি। কেজির হিসেবে ৪২ টাকায় কিনতে হয়েছে।’

তবে ভিন্ন চিত্র চোখে পড়েছে রাজা বাজারের পাইকারি আড়তগুলোতে। এই বাজারে খুচরায় মানভেদে প্রতি কেজি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। তারা পেয়াজের বস্তা ১৩০০ টাকায় কিনেছে। যা কেজিতে ৩২.৫০ টাকা করে পড়েছে।

হঠাৎই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে রাজা বাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ভারতীয় পেয়াজের রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশি পেয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে কেউ কিনতে পারছেন না কিংবা অভিযোগ করছেন এমন তথ্য সত্য নয়। এমনকি পেঁয়াজের বাজারে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকায় বগুড়ার বাজারে কোন ঘাটতি পড়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত ভারতীয় পেয়াজের অনুমোদন ছিলো। সেটা সরকার নতুন করে চুক্তি না করায় আমদানি আপাতত বন্ধ রয়েছে। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণের মজুদ রয়েছে। অনেকেই বলছেন বিদেশী পেঁয়াজ দেশের বাজারে আসলে এই পণ্যের দাম কমবে। কিন্তু তাতে করে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

এদিকে কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় আপাতত পেঁয়াজ আমদানির কোনো অনুমতি দিবে না সরকার। তবে সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, কৃষকের কথা বিবেচনা করে সরকার পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রাখলেও তাতে কোন সুফল পাচ্ছেন না তারা।

এনসিএন/এআইএ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print