নওগাঁয় নাবালিকা এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আবুল হাসান (২৫) নামের এক শিক্ষকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। এবং জরিমানাকৃত অর্থ নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার আসামীর উপস্থিতিতে উভয় দন্ডের এই রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আবুল হাসান বদলগাছী উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। ওই গ্রামের স্থানীয় আরবী শিক্ষক ছিলেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায় বদলগাছী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ৯ বছর বয়সের শিশু কন্যা অন্যান্য শিশুদের সাথে উত্তর পাকুরিয়া গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল হাসান এর নিকট আরবি পড়তো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ৬টায় আরবি পড়তে শিক্ষক আবুল হাসানের বাড়িতে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র ছাত্রী না আসায় একা পেয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে অন্য শিক্ষার্থীরা চলে আসলে তাৎক্ষণিক ওই শিশুকে ছেড়ে দিয়ে সবাইকে আরবী পড়ান আবুল হোসেন। আরবী পড়া শেষে বাড়িতে গিয়ে পুরো ঘটনা বাবা-মা’কে জানায় ওই শিক্ষার্থী। উক্ত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা থাকায় আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এরপর বিজ্ঞ আদালত এ পর্যন্ত মোট ৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিচারক এদিন দুপুরে আসামীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ কৌঁসুলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল হক।
তিনি বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এই বার্তা সমাজে ছড়িয়ে পড়লে অন্য শিক্ষকরা এমন ঘটনা ঘটানোর আগে অন্তত হাজার বার ভাববেন।
আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, শিক্ষক আবুল হাসান ন্যায় বিচার পাননি। তাই আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।