মে ১৭, ২০২৪ ৩:১৭ পিএম

গেল ২৪ ঘন্টায় নতুন ডেঙ্গু শনাক্ত ১৩ জন। হাসপাতালে মোট ভর্তি ৫১ জন।

বগুড়ায় ডেঙ্গুর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশার কয়েল-এরোসলের দাম

মশার কয়েল, এরোসল। প্রতীকী ছবি
মশার কয়েল, এরোসল। প্রতীকী ছবি

ভয়াবহরূপে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্ত-মৃত্যুতে প্রায় প্রতিদিনই ছাড়াচ্ছে রেকর্ড। এডিস মশাবাহিত রোগটির দাপট এখন দেশজুড়ে। ডেঙ্গুর কারণে চলতি মাসে দেশবাসীর রোজকার জীবনধারাই যেন পাল্টে গেছে। বেড়েছে খরচ। মশা থেকে বাঁচতে এই দুর্মূল্যের বাজারে রাখতে হচ্ছে বাড়তি বাজেট। সুযোগ বুঝে অসৎ ব্যবসায়ীরাও মশানিরোধক সব পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন কয়েকগুণ।

মশা থেকে বাঁচতে মশারি, কয়েল, এরোসল স্প্রে, লোশন, ক্রিম ও র‍্যাকেটের মতো মশাপ্রতিরোধী পণ্য কিনতে মানুষ ভিড় করছেন ফার্মেসি, মনিহারি দোকানগুলোতে। অনেক দোকান ঘুরেও মিলছে না মশা নিরোধক এসব পণ্য। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

ডেঙ্গুর সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশার কয়েল, এরোসল স্প্রে এবং ইলেকট্রিক মসকিউটো ভেপড় ওয়েলের দাম।

আরো পড়ুনঃ বগুড়ায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী; পৌরসভার নিয়ন্ত্রণচেষ্টা অপ্রতুল

এসব পণ্যের দাম বেড়েছে প্রতি প্যাকে ১৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় কোম্পানিগুলো এমন দাম বাড়িয়েছে বলছেন বিক্রেতারা। সেই সাথে খুচরা ব্যবসায়ীরা এর সাথে বাড়তি মূল্য যোগ করে পকেট কাটছে গ্রাহকদের।

বগুড়া ফতেহ আলী বাজারে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মশার কয়েল সর্বনিম্ন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশার এরোসল স্প্রে বোতলের দাম। মশার এরোসল ৪৯০মিলি স্প্রে বোতল ৩৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৪০ টাকা বেড়ে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০০ মিলি স্প্রে বোতল ৫৪০ টাকার বদলে বর্তমানে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইলেকট্রিক মসকিউটো ভেপড় ওয়েল ৯৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফতেহ আলী বাজারের মনিহারি ব্যবসায়ী মো: আশিক জানান, বাজারে এখন সর্বনিম্ন দামের কয়েল প্রতি প্যাকেট ৪০ টাকা। যা ৩ দিন আগেও ২৫ টাকা ছিল। বাজারে বর্তমানে ২৫ টাকা মূল্যের কোন কয়েলের প্যাকেট নেই। একই সাথে এরোসলের দাম বেড়েছে কোম্পানিভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা।

আরো পড়ুনঃ বগুড়ায় করোনা-ডেঙ্গু প্রাণ নিলো অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনের

এসকল পণ্যের মূল্য হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানীরা বলেন, কোম্পানি বাড়ালে আমাদের কিছুই করার থাকে না। ডেঙ্গু ও মশার প্রকোপ বাড়ায় চাহিদার সাথে সাথে কোম্পানিগুলো এর সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত মো: গোলাম রব্বানী। অফিস শেষ করে বাজারে কয়েল কিনতে এসে বলেন, “কোম্পানি যা দাম বাড়িয়েছে তার চেয়েও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে কয়েল এবং এরোসল। আমি গত চারদিন আগে এক প্যাকেট কয়েল কিনেছি ৯৮ টাকায়, আজ সেই কয়েল কিনলাম ১১০ টাকা দিয়ে। একটু সুযোগ পেলেই আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা নিজেদের আখের গোছাতে শুরু করেন। বিপদে পড়েন আমাদের মতো ক্রেতা সাধারণ। দেশে এসব দেখার যেব কেউই নেই।”

বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ১৩ জনের। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৫১ জন। এরমধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ৪৫ জন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৩ জন, কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন এবং গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন।

উল্লেখ্য যে, বগুড়ায় এর আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুইজন মারা যান। আর এর মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

 

এনসিএন/শাখ/স আ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print