বগুড়ার বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ হঠাৎ কমে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা। ক্রেতাদের চাহিদা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল জোগানে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলছেন বিক্রেতারা।
ফতেহ আলী বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানিরা সয়াবিন তেলের সংকটকের কথা অকপটে স্বীকার করছেন সেই সাথে তারা তীর ছুড়ছেন ডিলারদের দিকে। তারা জানান, গতকাল আমরা অনেকেই তেলের অর্ডার দিতে পারিনি। কোন কোন কোম্পানি তেল বাজারে সরবরাহ করলেও আজকে তেল সরবরাহ একেবারে বন্ধ রেখেছে ডিলাররা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘বাজারে সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকলেও বোতলজাত তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চাহিদা মেটাতে তারা খোলা তেল বিক্রি করছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফ্রেশ তেল কোম্পানির বগুড়া জেলার ডিলার মিশু ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারি রাকিব আহমেদ মিশু নর্থ ক্যাপিটাল নিউজকে জানান, “উৎপাদনকারী কোম্পানি থেকেই তাদের তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে আমাদের মজুদকৃত তেল শেষ হওয়ার কারণে খোলা বাজারে তেল সরবরাহ করতে পারছি না। এরই মধ্যে কোম্পানি আবারো তেলের দাম বাড়িয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গেল সপ্তাহে তেল পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছি ১৫৬ টাকা লিটার। সেই তেল ২ টাকা বাড়িয়ে ১৫৮ টাকা লিটার বিক্রি করেছি। এখন কোম্পানি আমাদের থেকে নিচ্ছে ১৬২ টাকা লিটার হিসেবে। এরপর দাম কতো হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না তবে তেল আসলে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী।’
রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী ও রাজা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত মাসে খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১৫৫-৬০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬৮-১৭০ টাকায়। অন্যদিকে খোলা ভিআইপি সয়াবিন ছিল ১৬৫ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। এছড়াও সুপার পামের দাম ২৫ টাকা বেড়ে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৬০টাকা।
হঠাৎই খোলা তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রাজা বাজারের খুচরা বিক্রেতা জানান, আমরা ব্যারেল হিসেবে তেল কিনি। মূলত তখনই আমাদের বেশি দামে তেল কিনতে হয়। পরে ক্রেতাদের কাছে সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে। বগুড়া শহরের নূরানী মোড়ের আজাদ-বাবলুর তেলের পাম্প থেকে খোলা তেল কিনে থাকেন বলে জানিয়েছেন তারা।
তবে হঠাৎ তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন সাধারণ ক্রেতারা। তারা জানান, ‘সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে তেলের দাম বেড়ে যাওয়াতে তারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।’
খুচরা বাজারে বোতলজাত তেলের চাহিদা থাকলেও বেশি লাভের আশায় খোলা তেল বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ করেছেন বাজারে ভোজ্যতেল কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতারা।
এনসিএন/এআইএ