গরমে চরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এরই মাঝে বগুড়ার সবজি বাজারে কাঁচা মরিচের ঝালে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের। গেল কয়েকদিন আগেও যে মরিচ খোলা বাজারে পাওয়া যেত ১০০ থেকে দেড়শো টাকায়, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আর এতেই বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা।
সম্প্রতি ভারত থেকে দেশের নানা প্রান্তে ৬০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ টন মেট্রিক ঢুকেছে বগুড়ার বিভিন্ন বাজারগুলোতে। স্বাভাবিকভাবেই মরিচের দাম কমার কথা থাকলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।
রোববার সরেজমিন বগুড়া শহরের কাঁচা পণ্যের বৃহৎ মোকাম রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি দরে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই পণ্য একটু দূরেই খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। বাজারের এমন অস্বাভাবিক চিত্র হতবাক করেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের।
এদিকে বগুড়ার পাইকারি বাজারে ভারত থেকে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচের দর কেজিতে ১৬০-৭০ টাকা। কিন্তু দেশীয় ও ভারতীয় মরিচের আকারভেদে পার্থক্য না থাকায় বাড়তি সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা বলে অভিযোগ উঠেছে।
আমদানিকৃত ও দেশীয় মরিচ মিশ্র আকারে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। বিষয়টি নিয়ে খুচরা বিক্রেতা আমিন প্রামাণিক বলেন, আমরা পাইকারিভাবে মরিচ কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করছি। বর্তমান বাজার অনুযায়ী আমরা খুব সীমিত লাভ করে মরিচ বিক্রি করছি। তবে মিশ্র মরিচের বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানেন না এই বিক্রেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, দু’দিন হলো বাজারে আমদানিরকৃত মরিচ আসতে শুরু করেছে। তবে বেশি দামে কেনা দেশীয় মরিচ মজুদ থাকায় পণ্যটির দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে রাজাবাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, বগুড়ার বাজারে মরিচের সংকট ছিলো। আর সে কারণেই এই পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তবে মরিচের আমদানি শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী কিছুদিনের মধ্যে এই পণ্যের দাম স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভবনা আছে।
ভারত থেকে কাঁচা মরিচের আমদানিকারক হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, ‘দেশের বাজারে মরিচের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এই পণ্যটি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় মরিচ আমদানি করছি আমরা। বর্তমানে আমরা যে মরিচটি আমদানি করছি সেটি কেজিতে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি করছি।’
আমিদানিকারকের আরেক সূত্রে জানা গেছে, ‘কাঁচা মরিচের মানভেদে কয়েকটি দামে এই পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের আমদানিকৃত মরিচগুলো ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি করছি।’
এদিকে খোলা বাজারে সঠিকভাবে তদারকির অভাব কাজে লাগিয়ে সুযোগ নিচ্ছে পাইকাররা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিরা। শুধু তাই নয়, দিনের পর দিন মরিচের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহুরে মানুষেরা।
এনসিএন/এআইএ/এ