বগুড়ার ফতেহ আলী বাজার থেকে ডিম কিনছিলেন মরিয়ম খাতুন নামের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বকশি বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার এক ডজন ডিম কিনতে তার খরচ হয়েছে ১৩২ টাকা। গত শনিবারেও তিনি ডিম কিনেছেন ১২০ টাকায়। এই পণ্যের দাম হঠাৎই বাড়ায় ক্ষুব্ধ মরিয়ম।
এই বাজারের দোকানি আব্দুল লতিফ প্রতি ডজন ডিমের দাম নিচ্ছেন ১৩২ টাকা। তবে শহরের বিভিন্ন খুচরা দোকানে ১৩৫ টাকায়ও ডিম বিক্রি হচ্ছে। শুধু খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে, তা নয়। গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারেও ডজন প্রতি ডিম দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা।
বগুড়ায় ডিমের দাম নির্ভর করে ফতেহ আলী বাজার ও রাজাবাজার সংলগ্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের উপর। মূলত এ দুই বাজারের ডিম ছড়িয়ে পড়ে বগুড়া শহরের বিভিন্ন মুদিদোকানে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ দুটি বাজারে ডিম আসে গাইবান্ধা, পাবনা ও ঢাকা থেকে। ফলে এসব এলাকায় ডিমের দাম বাড়লে বগুড়াতেও বাড়ে।
ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, ছোটখাটো খামার বন্ধ হয়ে উৎপাদন কমা এবং অন্যান্য নিত্যসামগ্রীর দাম বাড়ার প্রভাব ডিমের বাজারে পড়েছে।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন বগুড়া পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম লীডার। তিনি জানালেন, ডিমের দাম ওঠানামা করে উৎপাদন ক্ষেত্রে এর পেছনে ব্যয় কেমন হচ্ছে তার উপর। তবে গেল ৩ মাস আগেই পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়েছে, তখন এই পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়নি। কিন্তু গেল কয়েকদিনে হঠাৎই ডিমের দাম বৃদ্ধিতে তাকেও হতাশ করেছে।
হঠাৎই ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা খামারি পর্যায়ে আছি, তারা কিন্তু ডিমের সঠিক মূল্য পাচ্ছি না। কেননা আমরা ডিম উৎপাদনের পরপরই বাজারে সরবরাহ করি। সেই ডিম মধ্যস্বত্ত¡ভোগীরা সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করছেন। শুধু তাই নয়, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী করে অধিক মুনাফাও হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এই খামারি।’
নুরুল ইসলাম লীডার জানান, ডিমের বাজার এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন শক্তিশালী একটি ‘সিন্ডিকেট’। যারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় ভোক্তাদের নিম্নমানের ডিম খাওয়াচ্ছে। তবে তাদের এই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করা না গেলে ডিমের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিলেও বাজাওে যথাযথ তদারকি না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের। অন্যদিকে সুপার ফুড ডিমের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
এনসিএন/এআইএ