মে ১৩, ২০২৪ ১১:২৮ এএম

‘বডি শেমিং’ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়ে বিপাকে তসলিমা

তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন। ছবি: ইন্টারনেট

বিতর্ক যেন তসলিমা নাসরিনের পিছু ছাড়ে না। এ বার নেটমাধ্যমে তাঁর করা একটি পোস্ট নিয়ে উঠল ‘বডি শেমিং’-এর অভিযোগ। অন্যের শরীরের আকৃতি নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার কোনও অধিকার তাঁর নেই, নেটাগরিকরা মনে করিয়ে দিলেন তসলিমাকে।

শরীর সংক্রান্ত মন্তব্য করে অন্যকে হীনমন্যতায় ভোগানো বা ‘বডি শেমিং’ এখন মানসিক ও সাংস্কৃতিক মহামারি। এর ত্রাস ঘরে ঘরে, দেশ থেকে বিদেশে। প্যারিসের ফ্যাশন মঞ্চ থেকে আমার-আপনার অন্দরমহল, তারকা থেকে সাধারণ মানুষ… কাউকেই সে ছাড়ে না। নেটমাধ্যমে এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। অন্যের দৈহিক আকার, বর্ণ, সাজসজ্জা, অঙ্গের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে ঠাট্টার ছলে হুল ফুটিয়ে মজা নেন অনেকে। তসলিমাও কি সেই তালিকায় নাম লেখালেন? বুধবার, তসলিমার একটি ফেসবুক পোষ্ট ঘিরে সেই সওয়ালই করলেন নেটাগরিকরা।

ফেসবুকের একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন,‘সুগোল সুডোল ফার্ম স্তন দেখতে আমার খুব ভাল লাগে। মেয়েরা স্তন দেখানো, ক্লিভেজ দেখানো জামা পরলে বেশ লাগে দেখতে। সুদর্শন পুরুষদের যেমন শর্টস পরলে বা সুঠাম বাইসেপ দেখানো স্লিভলেস টিশার্ট, বুকের লোম দেখানো ডীপ ভি নেক টিশার্ট পরলে দেখতে ভাল লাগে, তেমন মেয়েদের কিছুটা নিতম্ব ঝিলিক দেওয়া সুগঠিত পা দেখানো মিনি শর্টস পরলে, ক্লিভেজ বা অর্ধেক স্তন দেখানো, পেট এবং নাভি দেখানো ছোট টপ পরলে দেখতে বেশ লাগে’।

পোস্টটি অবশ্য এখানেই শেষ হয়নি। তিনি বাকি পোস্ট জুড়ে আরও যা যা মন্তব্য করলেন, সেই দেখেই বেজায় চটেছেন নেটাগরিকরা! তসলিমা লেখেন, ‘কিন্তু আজকাল কী যে হয়েছে, যার স্তন দেখতে ভাল নয়, স্যাগিং, বা প্রায় ফ্ল্যাট, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলেব্রিটিরা ডীপ ভি নেক ড্রেস পরেন। কেন যে পরেন, কী দেখাতে, বুঝি না। আর বিশাল বপুর কুচ্ছিত পুরুষগুলোও আঁটসাঁট জামা পরে চললেন। চোখ সরাতে পারলে বাঁচি’!

তিনি আরও লিখেছেন, ‘সমুদ্রতীরে, বা লেকের পাড়ে রোদ্রস্নান করতে থাকা সুইমিং কস্টিউম পরা ছেলে আর বিকিনি পরা মেয়ে দেখলে চোখের আরাম হয়। কিছুই না পরা ছেলেমেয়ে দেখলে তো মনের আরও আরাম হয়। মানুষ যে প্রকৃতির সন্তান, তা তো নগরীর কোলাহলে অনেকটা ভুলতে বসেছি’।

তসলিমার লেখার নীচে একজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যা বললেন, তা বডি শেমিং এর পর্যায়ে পড়ে। এমন কি যে বর্ণনায় আপনার কাছে সৌন্দর্য, সেগুলো তাঁদের না থাকলেও তাঁদের কাছে সেগুলো সৌন্দর্যপূর্ণ। তাঁদের সেগুলো শেয়ার করার আনন্দে আপনি চোখ ফিরিয়ে নিতে পারেন, সেটি প্রকাশ্যে লিখলে তাঁরা যে অপমানিত হয়, সে সংবেদনশীলতা আমাদের অবশ্যই থাকতে হবে’।

তসলিমা কিন্তু বলেছেন, কে কী পরবে, তা নির্ধারণ করার তিনি কেউ-ই নন। সেই অধিকারও তাঁর নেই। তাঁর কি দেখতে ভাল লাগে তিনি সেটাই ব্যক্ত করেছেন মাত্র।

তবে এক জন লেখিকার কাছে এমন মন্তব্য কি আশা করা যায়, সেই প্রশ্নই তুলছে নেটদুনিয়া।

সূত্র: আনন্দবাজার

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print