অক্টোবর ১৯, ২০২৫ ২:২৮ এএম

বগুড়ায় দাম কমেছে তরমুজের, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

তরমুজ। ছবি: এনসিএন
তরমুজ। ছবি: এনসিএন

বগুড়ায় হঠাৎ কমেছে তরমুজের দাম। গেল কয়েকদিনের ব্যবধানে এই পণ্যের দাম আকাশ থেকে মাটিতে নেমেছে। ঈদের আগেও যে তরমুজ কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হয়েছিল ৩০০ টাকা, সেই তরমুজের দাম এখন ১০০ টাকা। তবে দাম কমলেও তরমুজের ক্রেতা মিলছে না খুচরা বাজারে।

মৌসুমি এই ফলের দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টিপাতের কারণে তরমুজের দাম কমেছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কৃষকেরা জমি থেকে বেশি পরিমাণে তরমুজ তুলে বাজারে তা সরবরাহ করেছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে তরমুজ বেশি হওয়াতে এই পণ্যের দাম কমে গেছে বলছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাজারে নতুন মৌসুমি ফল লিচু ও আম এসেছে। দাম বেশি হলেও এই ফলগুলো সংগ্রহ করছেন ভোক্তারা। এ কারণে তরমুজের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি রোজার তুলনায় এখন তরমুজের চাহিদা কমেছে। এমনকি খুচরা বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা কমেছে, তাই দামও কমেছে।

সোমবার সরেজমিন শহরের স্টেশন রোড, কাঠালতলা, গালাপট্টি ও বড়গোলার মৌসুম ফল বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ‘বর্তমান বাজারে যেসব তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই আসছে সাতক্ষীরা ও খুলনা থেকে। এসব তরমুজের আকার ছোট হলেও স্বাদ খুবই ভালো। এছাড়াও বরিশালের ভোলা থেকে যেসব তরমুজ আসছে, সেসব আকারে বড় হলে স্বাদ কম। তাই খুলনার বাংলালিংক তরমুজের চাহিদা কিছুটা রয়েছে।’

শহরের রাজা বাজার সংলগ্ন এলাকায় তরমুজ বিক্রি করছেন অমল দাস। তিনি জানালেন, ক’দিন আগেও চাহিদা অনুযায়ী কেজিতে ৬০ টাকায় তরমুজ বিক্রি করেছি। ৫-৬ কেজির একটি তরমুজ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে সেই তরমুজ ১০০ টাকা হলেই পাওয়া যাচ্ছে। তবুও কেউ নিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিনই ১০ থেকে ১২টা তরমুজ পচেঁ যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন তরমুজের সরবরাহ ভালো, দাম কমেছে। কিন্তু ক্রেতারা তরমুজ নিতে চাইছেন না। বাজারে লিচুর আমদানি বেড়ে যাওয়ায় তরমুজের চাহিদা কমেছে। তবে জৈষ্ঠ্য মাসে সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে এই পণ্যের দাম বাড়বে বলেও আশাবাদী তিনি।

মেরিনা রোডে ভ্যানে তরমুজের পসরা সাজিয়েছেন বাদশা মন্ডল। তিনি বলেন, আজ ৮০ কেজি তরমুজ কিনেছি। তরমুজ কেজিতে ২০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্রেতারা এই ফল কম কিনছেন। ঈদের আগে ক্রেতাদের সাথে দাম নিয়ে কোন কথায় বলতে হয়নি। কিন্তু এখন দর কষাকষি করেও ক্রেতার হাতে তরমুজ ‍তুলে দিতে পারছি না। শুধু তাই নয়, তরমুজ কেনা থেকে খুচরা বাজারে আনতে আমাদের যা খরচ হচ্ছে, সেই খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছি।

৬০ টাকায় তিন কেজি তরমুজ কিনেছেন চিন্ময় কুমার। তার কথায়, আজ ৩ কেজির একটি তরমুজ ৬০ টাকায় কিনেছে। তবে ক’দিন আগেও এই তরমুজ কিনতে গুনতে হয়েছিলো ১৫০ টাকা। সায়শ্রী দামে তরমুজ কিনে স্বস্তি প্রকাশ করলেন এই ক্রেতা।

শহরের স্টেশন রোডের আড়তদার মো. স্বাধীন জানিয়েছেন, রোজার আগে ও পরে কিছু ব্যবসায়ী তরমুজ এনেছিলেন। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা নতুন ফল নামাতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে লিচু ও আমের দিকে এখন তারা নজর দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের দিন থেকে টানা বৃষ্টির কারণে তরমুজের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেসময় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকেরা বাজারে বেশি পরিমাণে তরমুজ সরবরাহ করেছেন। আর এটিই তরমুজের দাম কমে যাওয়ার প্রধান কারণ বলছেন তারা।

এনসিএন/এআইএ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print