অক্টোবর ১৮, ২০২৫ ৬:৪০ পিএম

কোরবানি উপলক্ষে জমে উঠেছে দা-ছুরির কেনাবেচা

কোরবানি উপলক্ষে জমে উঠেছে দা-ছুরির কেনাবেচা
কোরবানি উপলক্ষে জমে উঠেছে দা-ছুরির কেনাবেচা। ছবি: এনসিএন

বগুড়া: আর কয়েকদিন পরেই উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদে পশু কোরবানি ও আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য দা, ছুরি, চাপাতি ও বটিসহ লোহার তৈরী অন্যান্য উপকরন বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। আর এসব দেশীয় যন্ত্রপাতি বিক্রিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার ব্যবসায়ীরা।

পুরোদমে এখনও বিক্রি শুরু না হলেও দিন-রাত এসব দোকানে চলছে টুং-টাং শব্দ। তবে কয়লা, লোহা ও কর্মকারের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব যন্ত্রপাতির দাম কিছুটা বেশি বলছেন ক্রেতারা।

মঙ্গলবার সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন দোকানে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই পশু কোরবানি জন্য দা ও ছুড়ি কিনতে ভিড় করছেন এই দোকনগুলোতে। তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এসব দোকানিদের ব্যস্ততা। পাশাপাশি বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দোকানে বেড়েছে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও।

ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখুন

শহরের তিন নাম্বার রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় দেশীয় যন্ত্রপাতির পসরা সাজিয়ে বসেছেন মুকুল ইসলাম। তিনি জানালেন, ‘কোরবানি ঈদ এলেই ক্রেতাদের সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে যায়। এতে করে আমাদেরও চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পণ্য কিনতে হয়। যাতে করে সবার চাহিদা মেটাতে পারি।’

মুকুল ইসলাম বলেন, আমরা এই দোকানে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুম ব্যবসায়ীরা এসে পণ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এগুলো নিজ এলাকায় নিয়ে তারা ব্যবসা করেন। শুধুমাত্র ঈদের সময়টাতেই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শহরের আরেক পুরোনো ব্যবসায়ী অমল দাস। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসায়ের সাথে জড়িত আছেন তিনি। তবে তার কন্ঠে ঝড়লো হতাশার সুর।

অমল জানালেন, ‘আমি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত আছি। কিন্তু আমার পূর্ব অভিজ্ঞতায় এমন ক্রেতা শূণ্য ঈদ আমি দেখিনি। ঈদের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই এসব যন্ত্রপাতি কিনতে শুরু করেন শহুরে মানুষজন। তবে এবার আমি তেমন ভিড় দেখছি না। ঈদের দু-তিন দিন আগে তার ব্যবসা চাঙ্গা হবে বলেও প্রত্যাশা করছেন তিনি।

কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য পাতের তৈরী পাকা ছুরি কিনতে এসেছেন বগুড়া সদরের গোহাইল রোডের বাসিন্দা শামীম হোসেন। তিনি বললেন, গেল কয়েকবছর আগের ছুরিটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি নতুন একটি ছুরি কিনেছেন। তবে দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি। ঈদকে কেন্দ্র করে নানা অজুহাতে দেশীয় অস্ত্রের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে মনে করছেন এই ক্রেতা।

শহরের অধিকাংশ দোকানেই কোরবানি উপলক্ষে মানভেদে পশুর চামড়া ছেলা ছুরি ২০ থেকে ৪০ টাকা, খাসি জবাইয়ের ১২ ইঞ্চি ছুরি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, গরু জবাইয়ের পাকা ছুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, গোশত কাটার দা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বটি ১৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি বিক্রি শুরু হয়েছে কাঠের তৈরী খাটিয়া। খোলা বাজারের এসব খাটিয়া পিচ ও কেজিতে বিক্রি করছেন মৌসুম ব্যবসায়ীরা।

কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেল, বেল ও তেতুলের তৈরী এসব খাটিয়া ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ক্রেতাদের পছন্দানুযায়ী দাম হাঁকছেন।

এনসিএন/এআইএ

 

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print