অক্টোবর ১৬, ২০২৫ ১২:১৪ এএম

বগুড়ায় পূজার নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা

‘দূর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে’

দূর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে: বগুড়া এসপি
দূর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে: বগুড়া এসপি। ছবি: এনসিএন

বগুড়ায় দূর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শারদীয় দূর্গা উৎসবের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

তিনি বলেন, দূর্গাপূজা সূষ্ঠুভাবে উদযাপন করতে আইন শৃঙখলা বাহিনীর প্রতিটি শাখা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি প্রতিটি মূহুর্তে আমদের সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও মন্ডপগুলো তদারকি করছে। আমরা সবাই যদি সচেতন থাকি তাহলে শারদীয় দূর্গা উৎসবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না। এজন্য আইন শৃঙখলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত বছর সারা দেশের নানাস্থানে অবিছিন্ন ঘটনা ঘটলেও বগুড়ায় কিন্তু কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। এখানে একসময় তিন ধর্মের আধিপত্য ছিলো (বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলাম)। আর এ কারণেই জেলায় সসম্প্রীতির বন্ধন অটুট রয়েছে। এমনকি আগামীতেও থাকবে বলে আশা করছি।’

নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি উল্লেখ করে সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দূর্গাপূজায় প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা জেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছি। যে মন্দিরগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে সেখানে নিরাপত্তা প্রাচীর ও তদারকি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামী দিনে মন্দিরের সুরক্ষা বলয় তৈরীতে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

সভায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বলেন, দূর্গাপূজায় বিকেলের পরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজট সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য ট্রাফিক বিভাগের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও সেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব নিতে হবে। একই সাথে আগামী মাসে ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত দূরপাল্লার যানবাহন যেন শহরের অভ্যন্তরে চলাচল না করে সেজন্য পরিবহন মালিকদের বিষয়টি নজরে রাখতে হবে। প্রয়োজনে তাদের সাথে বিষয়টি আলোচনা করব।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ্য করে একটি কুচক্রী মহল নাশকতা ঘটাতে পারে। সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে জেলার সম্মানিত জনগণদের সচেতন থাকতে হবে। বিগত সময়ে আপনারা যেভাবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থেকেছেন আগামীতেও সেভাবেই থাকবেন বলে আশা করছি। উৎসবের মঞ্চে কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ কল করলেই আইন শৃঙখলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে যাবে।

এদিন সমন্বয় সভায় বিভিন্ন উপজেলার পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজা। তাই নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে এই উৎসব পালন করতে পারি সেজন্য আইন শৃঙখলা বাহিনীর থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি যে সকল পূজা মন্ডব অরক্ষিত অবস্থায় আছে সেগুলোতে নজর দিতে হবে। সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ চালু রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।

সমন্বয় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রশীদ (অপরাধ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আক্তার, জেলা আনসারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক কাওসার জাহান, বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু সাগর কুমার, বগুড়া জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. এন সি বাড়ই।

এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেম ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্সেস (এনএসআই) সহকারী পরিচালক মোজাহারুল ইসলাম, র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-১২) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, ডিজিএফআইয়ের সহকারী পরিচালক কলিমুজ্জামানসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি অফিসার ইনচার্জ (ওসি), গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, সাংবাদিক এবং জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

এনসিএন/এআইএ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print