ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫ ১২:৩৩ পিএম

আদমদীঘিতে ইউএনও’র পদক্ষেপে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষার মান

বগুড়ার আদমদীঘিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজের পদক্ষেপে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষার মান। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের নিয়মিত, সুষ্ঠু, উন্নত ও পদ্ধতিগত পাঠদান, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি। যার

ফলে একটি পরিবর্তন এসেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ইউএনও’র এমন উদ্যোগ গ্রহণে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।

জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরতরা গা- ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। পরবর্তী সরকার এ বিষয়ে চিন্তা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করার জন্য সকল জেলা ও উপজেলাতে প্রশাসনের কাছে দায়িত্বভার দেওয়া হয়। ফলে নতুন অভিভাবকের দেখা মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার আদমদীঘিতে মাদ্রাসা, স্কুল ও কলেজসহ ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার পান উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ। এরপর থেকে তাঁর নির্দেশনায় শুরু হয় শিক্ষার নতুন কার্যক্রম। চলে তাঁর নিয়মানুসারে পাঠদান।

শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার ও বিপুল হাসান জানান,
আওয়ামী সরকার পতনের পর বিভিন্ন স্কুল, কলেজে ঝামেলা ও বিরোধের সৃষ্টি হয়। আস্তে আস্তে শিক্ষার গতিবিধি থেমে যায়। এভাবে কয়েকদিন চলার পর নতুন ভাবে দায়িত্বভার পান উপজেলা প্রশাসন। এরপর আবারও শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। শুধু তাই নয় আগের থেকে বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে শিক্ষকরা। বিগত দিনে শিক্ষা কার্যক্রম এমনটা ছিলো না। হেলায় খেলায় ক্লাস নেওয়া হতো। এখন নিয়মিতভাবে যত্নসহকারে ক্লাস নিচ্ছে আমাদের। ফলে নিয়মিত ক্লাস করায় ফলে কোন প্রাইভেট বা কোচিং করার প্রয়োজন পড়ছে না। আগের সময়ে বেশিভাগ সভাপতির দায়িত্ব ছিলো স্থানীয় আওয়ামীপন্থী লোকজন। এজন্য শিক্ষকদের গুরুত্ব দিয়ে কিছু বলতো না। তারা নিয়োগ ও বিভিন্ন অর্থিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। ক্লাসের প্রতি গুরুত্ব দিতো কম। এখন পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা সহ সাংস্কৃতিক নাচ, গান শেখানো হচ্ছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি বেড়েছে।

সান্তাহার বনমালী পরমেশ্বর (বিপি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার ভৌমিক জানান, ইউএনও স্যারের দিকনির্দেশনায় যেভাবে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবে আমি কাজ করছি। স্কুলে ছাত্রদের উপস্থিতি সংখ্যা সহ কি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এর ফিডব্যাক সাথেসাথে ভিডিও করে দিতে হয়। এখন শিক্ষকরা নিয়মিত পাঠদান করছে। ফলে পড়াশোনার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পাওয়ার পর শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে কয়েকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পাঠ পরিকল্পনা (রুটিং) ও মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে৷ পাঠ পরিকল্পনার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম, ক্লাস রুটিং এবং সপ্তাহে একদিন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক গান, নাচের ট্রেনিং নিতে পারছে। সকাল ১০ টা থেকে কি ক্লাস নেয়া হচ্ছে তার ফিডব্যাক দিচ্ছেন শিক্ষকরা। এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বক্ষণ মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার জন্য বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী দেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, আদর্শ মানুষ হওয়ার মূল ভিত্তি সুশিক্ষা। এজন্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের নিয়মিত, সুষ্ঠু, উন্নত ও পদ্ধতিগত পাঠদান করা প্রয়োজন। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা গেলে আগে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আগের থেকে বেড়েছে। নিয়মিত ক্লাস হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা কোচিং বা প্রাইভেট থেকে বেশি ঝুঁকেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কিছু প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ায় একটা পরিবর্তন হয়েছে। প্রত্যাশা করছি সামনে এসএসসি এবং এইচএসসি পরিক্ষায় তারা ভালো কিছু করবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print