রাজনৈতিক বিভক্তি রাজপথ অতিক্রম করে বিচারালয়ের দিকে এলে তা মঙ্গলজনক হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষে বিদায় সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এই মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতির বিদায় সংবর্ধনায় তার এজলাস (আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষ) আইনজীবীসহ অন্যব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ ছিল। অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, মনে রাখতে হবে, আইনজীবীদের বিভক্তি, মতভেদ ও এর প্রতিক্রিয়া বিচারালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। রাজনৈতিক মতাদর্শ রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়ন করলে, বিচারালয়কে নিরাপদ দূরত্বে রাখলে বিচার বিভাগ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। তার ৬৭ বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। সেদিন অবকাশকালীন ছুটি রয়েছে। এ কারণে আজই ছিল তার শেষ কর্মদিবস।
প্রথা অনুসারে আজ প্রধান বিচারপতিকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনায় প্রথমে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য দেন। পরে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, বিচার বিভাগ প্রজাতন্ত্রের হৃৎপিণ্ড। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দক্ষতার চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের আর কোনো উপযুক্ত পরীক্ষা নেই। একটি জাতির জনগণ শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে সে জাতিকে খারাপ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আইনের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বা প্রাধান্য কার্যকর করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের। বিচার বিভাগ যদি আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ বা পিছপা হয়, তাহলে রাষ্ট্র ও নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য।
বিচার বিভাগ সংবিধানের আধিপত্য রক্ষার পাশাপাশি জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন সংরক্ষণ, সমাজের দুর্বল অংশের অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
এনসিএন/এসকে